মোবাইল ইন্টারনেটে হঠাৎ কেন ধীরগতি, যা বললেন প্রতিমন্ত্রী ও বিটিআরসির চেয়ারম্যান
নিউজ ডেস্ক | প্রকাশিত: ৩০ জুলাই ২০২৪ ১৭:৫৩; আপডেট: ৭ ডিসেম্বর ২০২৪ ২০:৩৮
:: সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ ও সহিংসতার মধ্যে কয়েক দিন ধরে দেশে ইন্টারনেট বন্ধ থাকার পর ২৩ জুলাই রাতে দেশে সীমিত পরিসরে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা চালু করা হয়। গতকাল রোববার বেলা তিনটা থেকে মুঠোফোনে ফোর-জি ইন্টারনেট চালু হয়েছে। তবে আজ সোমবার দুপুর থেকে ফোর-জি মোবাইল ইন্টারনেট ধীরগতিতে চলছে বলে রাজধানী ঢাকার অনেক ব্যবহারকারী জানিয়েছেন। ফোর-জি নেটওয়ার্কে ইন্টারনেট ব্যবহারে যে গতি সাধারণভাবে পাওয়ার কথা, তা মুঠোফোনে পাওয়া যাচ্ছে না বলে অনেকেই প্রথম আলোর কাছে অভিযোগ করেছেন।
কেন মোবাইল ইন্টারনেটের গতি ধীর হয়ে গেল, এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক মুঠোফোনে আজ রাত সাড়ে আটটায় প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটা একটু বিটিআরসিকে জিজ্ঞেস করতে হবে। এর কোনো টেকনিক্যাল (কারিগরি) কারণ আছে কি না। এ বিষয়ে বিটিআরসির সঙ্গে কথা বলতে হবে। তারা এর ব্যাখ্যা দিতে পারবে।’
এ বিষয়ে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান মো. মহিউদ্দিন আহমেদ আজ রাত নয়টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আসলে গতি (মোবাইল ইন্টারনেটের) কম থাকার কথা নয়। হয়তো কেউ কেউ কোথাও স্পিড (গতি) কম পাচ্ছে, বলে জানা গেছে। আর একটা বিষয় সবার মাথায় রাখতে হবে, মোবাইল ইন্টারনেটের গতি নিয়ে এর আগেও মানে ঘটনা প্রবাহের আগেও অভিযোগ যে ছিল না, তা কিন্তু না।
আমরা চেষ্টা করছি সার্বিকভাবে ইন্টারনেটের গতি ঠিক রাখার। এর আগেও চেষ্টা করেছি, এখনো করছি। এখন তো কিছু কারিগরি বিষয়ও (টেকনিক্যাল ইস্যু) দাঁড়িয়ে গেছে। গুগল ক্যাশ বন্ধ ছিল, এখন সেটা হালানাগাদ করতে ওরা ব্যান্ডউইড্থ নিচ্ছে। আমাদের প্রচুর ক্যাশ সার্ভার আছে, বাংলাদেশে এ সংখ্যা চার হাজারের বেশি। এর মধ্যে গুগলেরই আছে অর্ধেকের বেশি। ইন্টারন্যাশনাল ব্যান্ডউইডথের ওপর প্রভাব পড়েছে। ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ বা অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ রয়েছে বলে ব্যান্ডউইড্থ কম লাগছে, বিষয়টি তা নয়। সেগুলোও ভিপিএনের (ভার্চ্যুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক) মাধ্যমে কেউ কেউ ব্যবহার করছে। এটা ঠিক হয়ে যাবে, ঠিক হয়ে যাচ্ছে। তবে গতি পাচ্ছে না এমন শোনা যাচ্ছে না। কেউ কেউ হয়তো পাচ্ছেন না। আমাদের দিক থেকে কোনো গতি কমানো হয়নি।’
কেউ যদি দাবি করেন যে ফোর-জি নেটওয়ার্ক পাচ্ছেন না, তবে তা ভুল বলে উল্লেখ করেন বিটিআরসির চেয়ারম্যান মো. মহিউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘বিটিআরসির চেয়ারম্যান হিসেবে বলছি কোনো ধরনের গতি কমানো হচ্ছে না। বরং আমরা এটাকে আরও ভালো করার চেষ্টা করছি।’
রাজধানীর মিরপুর, বাড্ডা, যাত্রাবাড়ী, শাহবাগ, রামপুরা, পান্থপথ, কারওয়ান বাজার ও ধানমন্ডিসহ বিভিন্ন এলাকার মুঠোফোন ব্যবহারকারীরা জানিয়েছেন, আজ সকাল পর্যন্ত ইন্টারনেটের গতি ঠিকই ছিল, তবে দুপুর থেকে গতি ধীর হয়ে গেছে।
মুঠোফোনে নেটওয়ার্ক ফোর-জি দেখালেও কাঙ্ক্ষিত গতি পাওয়া যাচ্ছে না। দেশে মুঠোফোনে ফোর-জি ইন্টারনেটের গতি সাধারণত ৩০ এমবিপিএস (১ এমবিপিএস=১০২৪ কেবিপিএস) ও এর বেশি হয়ে থাকে। ইন্টারনেটের গতি পরীক্ষার জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ফাস্ট ডটকম ব্যবহার করে বেশ কিছু মুঠোফোনে দেখা যায়, ফোর-জি নেটওয়ার্কে ৩০ কেবিপিএস থেকে ৩ এমবিপিএস পর্যন্ত গতি পাওয়া যাচ্ছে; যা কোনোভাবেই ফোর-জির মানগতি নয়। রাত সাড়ে ১০টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ফোর-জি মোবাইল ইন্টারনেটে বেশ ধীরগতি দেখা যায়।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: