ঢাকা শনিবার, ১০ জুন ২০২৩, ২৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০

ক্লাব যদি তাদের খেলোয়ারদের না ছাড়ে, সেক্ষেত্রে বাফুফে তাদের উপর চাপ প্রয়োগ করতে পারে না: সোহাগ

সাফ অ:২০ চ্যাম্পিয়নশিপে ক্লাবের স্বার্থ রক্ষার্থে দেশের জন্য ছাড়পত্র পাননি ইয়াসিন, রিমন মোরসালিন ও আসিফ

ক্রীড়া ডেস্ক | প্রকাশিত: ২২ জুলাই ২০২২ ০০:২৬; আপডেট: ২২ জুলাই ২০২২ ০৩:০৩

ইনসেটে: ইয়াসিন, মোরসালিন ও রিমন

 

তাহলে কি দেশের চেয়েও ক্লাবের স্বার্থই বড়। যেখানে শেষ ম্যাচে লাল কার্ড পাওয়া ইয়াসিন এমনিতেই পরে ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ তাছাড়া ইতিমধ্যেই কিংস তাদের হ্যাট্টিক শিরোপাও নিশ্চিত করেছে তারপরও ক্লাবের স্বার্থ রক্ষার্থে সাফ অনূর্ধ্ব ২০ চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য ইয়াসিন আরাফাত এবং রিমনকে ছাড়পত্র দেয়নি কিংস। যেখানে তাদের পরবর্তী ম্যাচগুলো তাদের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ক্ষেত্রে কোন বাধাঁ নেই তারপরও তারা দেশের সম্মানার্থে তাদের ছাড়পত্র না দেওয়া তাদের দেশাত্ববোধ নিয়ে সংশয় রয়েই গেলো। তাহলে কি দেশের চেয়ে ক্লাবই বড়।

অন্যদিকে মোহামেডানের মোরসালিনতো এবারের লীগের আইকনিক ইয়ুথ খেলোয়ার হিসেবে এরই মধ্যে সবার নজর কেড়েছেন। কিন্তু মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবও ছাড়েনি শেখ মোরসালিন ও আসিফকে। লিগে পারফরম্যান্স দিয়ে নজরকাড়া এই চার জনকে ছাড়াই তাই সাজানো হলো সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপের দল।

 

এই বিষয়ে সাংবাধিকদের প্রশ্নের উত্তরে বাফুফে সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগ বলেন, ক্লাব যদি তাদের খেলোয়ারদের জাতীয় দলের জন্য ছাড়পত্র প্রদান না করেন, তাতে বাফুফের কিছুই করা থাকে না। কারণ এই বিষয়ে ফিফা থেকে কোন চাপ প্রয়োগ করার মতো নিয়ম নেই। যাহা সম্পূর্ণ ক্লাবের সাথে কথাবলে তাদের ইচ্ছার উপরই নির্ভর করে। তারা যদি  তাদের খেলোয়ারদের জাতীয় দলের জন্য ছাড়পত্র প্রদান না করেন সেক্ষেত্রে বাফুফে তাদের উপর কোন চাপ প্রয়োগ করতে পারবে না।

 

ভারত, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ ও নেপাল-এই পাঁচ দল নিয়ে আগামী ২৫ জুলাই ভুবনেশ্বরে ‍শুরু হচ্ছে সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপ। বয়সভিত্তিক এই প্রতিযোগিতার আগের আসরগুলো হয়েছে অনূর্ধ্ব-১৮ ও ১৯ বয়সীদের নিয়ে। এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের (এএফসি) টুর্নামেন্টের সঙ্গে মানিয়ে নিতে এবার সাফের আসরটি হচ্ছে অনূর্ধ্ব-২০ বছর বয়সীদের নিয়ে।

পরীক্ষিত চার জনকে ছাড়া দল গোছাতে হলেও বাংলাদেশ দেখছে বড় স্বপ্ন। আপাতত ফাইনালে খেলা লক্ষ্য বলে বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে জানালেন অধিনায়ক তানভির হোসেন। সহ-অধিনায়ক মঈনুল ইসলাম মঈনও জানালেন ভালো প্রাপ্তি নিয়ে ফেরার প্রত্যয়।

বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নশিপ লিগ শেষের পর প্রায় মাস খানেক পল থমাস স্মলির কোচিংয়ে প্রস্তুতি নিয়েছে দল। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের টেকনিক্যাল ও স্ট্র্যাটেজিক ডিরেক্টর স্মলিই থাকবেন ভুবনেশ্বরে লাল-সবুজ জার্সিধারীদের ডাগআউটে।

বাফুফে এলিট একাডেমির ১২ জন এবং চ্যাম্পিয়নশিপ লিগ ও প্রিমিয়ার লিগ খেলাদের নিয়ে ২৩ জনের দল সাজিয়েছেন তিনি। এদের মধ্যে তানভির, শান্ত কুমার রায়, শাহীন আহমেদ, রাজন হাওলাদার, আক্কাস আলি ও পিয়াস আহমেদ নোভার আছে লিগে খেলার অভিজ্ঞতা। দল নিয়ে সন্তুষ্ট স্মলি।

“এই দল গোছানোর প্রক্রিয়া আমরা জুনের শুরুর দিকে শুরু করেছি। বাফুফে এলিট একাডেমি থেকে ১২ জন, চ্যাম্পিয়নশিপ লিগের ৫ জন এবং লিগ থেকে ৬ জন খেলোয়াড় নিয়েছি। দুর্ভাগ্যজনকভাবে লিগের খেলা চলায় এবং সামনে ফিফা উইন্ডো তাকায় বিপিএলের কিছু খেলোয়াড় আমরা পাইনি।”

“এ কারণে যারা সুযোগ পেয়েছে, এই দলে আছে, তাদের সামনে আছে পারফরম করার সুযোগ। বিসিএল থেকে কিছু মেধাবী খেলোয়াড় উঠে আসতে দেখেছি আমরা, আমি কল্পনা করতে পারছি, তারা আগামী মৌসুমে বিপিএলে খেলবে। লিগে খেলা ফুটবলারও আছে। বিসিএল ও লিগ মিলিয়ে ছেলেরা খেলার মধ্যে ছিল। ফলে আমাদের প্রস্তুতিও অনেক ভালো।”

২০১৫ সাল থেকে শুরু হওয়া এই প্রতিযোগিতায় আজও সেরা হওয়ার স্বাদ পায়নি বাংলাদেশ। ২০১৯ সালে অনূর্ধ্ব-১৮ বছর বয়সীদের নিয়ে হওয়া প্রতিযোগিতায় রানার্সআপ হয়েছিল দল। কাঠমান্ডুর ওই সাফল্য ভুবনেশ্বরে ছাপিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য জানালেন অধিনায়ক তানভির।

“স্কোয়াডে যারা আছে, এদের মধ্যে বেশির ভাগই এলিট একাডেমির। এছাড়া লিগ ও বিসিএলের খেলোয়াড়ও আছে। সবাইকে নিয়ে ভালো প্রস্তুতি নিয়েছি। কোচ ভালো দিক নির্দেশনা দিয়েছে, প্রস্তুতিতে সবাই শতভাগ দিয়েছে। আশা করি, আমরা ভারতে গিয়ে ভালো একটা ফল করতে পারব। দল নিয়ে আমরা আশাবাদী।”

সবশেষ চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে ১৮ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছেন মঈন। উত্তরা এফসির এই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার যোগ দিয়েছেন লিগের ঐতিহ্যবাহী দল মোহামেডানে। তিনিও ভালো করে জানেন ভুবনেশ্বরে গোলের জন্য তার দিকে তাকিয়ে থাকবে দল।

“বিসিএলে ১৮ গোল করেছি। এখানেও দল আমার কাছে গোল চাইবে। অনুশীলনে আমাকে নাম্বার ১০ পজিশনে খেলিয়েছেন কোচ। আশা করি, কোচের প্রত্যাশার প্রতিদান দিতে পারব।”

“১৫-২০ দিন ধরে আমরা একসঙ্গে অনুশীলন করেছি। সবাই মোটামুটি ভালো খেলোয়াড়, বাছাই করে তাদের নেওয়া হয়েছে। এতদিন আমরা কোচের ট্যাকটিকস ও টেকনিক নিয়ে কাজ করেছি, অনুশীলনে সবাই ভালো করছে। আমাদের প্রথম লক্ষ্য ফাইনালে ওঠা। ভালো একটা ফল নিয়ে দেশে ফেরা।”

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top