02/04/2023 দ্বিতীয় ইউনিটে চুল্লি স্থাপন কাজের উদ্বোধন আজ
সঞ্চিতা সীতু
১৯ অক্টোবর ২০২২ ০২:০৯
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটের পারমাণবিক চুল্লি বা নিউক্লিয়ার রিয়্যাক্টর প্রেসার ভেসেল স্থাপন করা হবে আজ বুধবার (১৯ অক্টোবর)।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আজ এই কাজের উদ্বোধন করবেন।
এরপর এই কেন্দ্র পরিচালনার জন্য দক্ষতা বাড়াতে একটি ট্রেনিং সেন্টারের উদ্বোধন করা হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি করপোরেশন রোসাটমের মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভ এর।
এছাড়া আরও উপস্থিত থাকবেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব জিয়াউল হাসান, রূপপুর প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক শৌকত আকবর। ঈশ্বরদীর জনপ্রতিনিধি, পরমাণু শক্তি কমিশনের কর্মকর্তাসহ সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, কেন্দ্র প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি রোসাটম ও এটমস্ট্রয় এক্সপোর্টের কর্মকর্তারাও থাকবেন সেখানে।
এর আগে ২০২১ সালের ১০ অক্টোবর এই কেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের পারমাণবিক চুল্লি স্থাপনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। রাশিয়ার ভোলগোদোনস্কের অটোম্যাসের কারখানায় এটি প্রস্তুত করা হয়েছে। রিঅ্যাক্টরগুলোর প্রত্যেকটির ওজন ৩৪০ টন এবং এগুলোর দৈর্ঘ্য যথাক্রমে ১২ মিটার ও ১৪ মিটার।
রিঅ্যাক্টরগুলোকে কারখানা থেকে থেকে প্রথমে জাহাজে করে জলপথে রাশিয়ার নভোরোসিস্কে নেওয়া হয়। সেখান থেকে ১৪ হাজার কিলোমিটার সমুদ্রপথ পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশের মোংলা বন্দরে নিয়ে আসা হয়।
জানা যায়, রিঅ্যাক্টর উদ্বোধনের পর রোসাটমের মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভ সেখানে একটি ট্রেনিং সেন্টারের উদ্বোধন করবেন। এই ট্রেনিং সেন্টারটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনার বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। বাংলাদেশি কর্মীদের অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতিসহ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে সেখানে।
পারমাণবিক চুল্লি
রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্র নির্মাণকারী রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান রোসাটম জানায়, পারমাণবিক চুল্লি পাত্রটির ওজন ৩৩৩ দশমিক ৬ টন এবং এগুলো দৈর্ঘ্যে যথাক্রমে ১২ মিটার ও ১৪ মিটার। এ ধরনের যন্ত্রাংশ স্থানান্তর ও পরিবহন একটি জটিল প্রক্রিয়া। বিশেষ করে চুল্লি স্বয়ংক্রিয় যানে করে প্রথমে রাশিয়ার ভোলগোদোনস্কের সিমলিয়ান্সককের একটি জেটিতে পাঠানো হয়। সেখান থেকে এগুলো নভোরোসিয়েস্কে পৌঁছায়। সেখান থেকে ১৪ হাজার কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে কৃষ্ণসাগর এবং সুয়েজ ক্যানেল হয়ে এটি বাংলাদেশের মোংলায় এসে পৌঁছায়।
চুল্লির বিষয়ে জানতে চাইলে শৌকত আকবর বলেন, এটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল হচ্ছে পারমাণবিক চুল্লি। যেখানে মূল জ্বালানি থাকবে। এটিকে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের হার্ট বা হৃদপিণ্ড বলা যায়।
জানা যায়, যে যন্ত্রে নিউক্লিয়ার ফুয়েল (পারমাণবিক জ্বালানি) ইউরেনিয়াম থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয় তার মূল কাঠামো হচ্ছে এই বিশেষ যন্ত্র, পরমাণু চুল্লি। রিঅ্যাক্টরগুলোর কার্যকাল ৬০ বছর, যা প্রয়োজনে আরও ২০ বছর বাড়ানো যাবে।
রোসাটম রিয়েক্টর আনার সময় জানিয়েছিল, রিঅ্যাক্টরটি নির্মাণ প্রক্রিয়ায় ৭৬৮টি অপারেশন এবং ১৪৩টি কন্ট্রোলিং পয়েন্টসহ এটিকে নির্মাণ করতে মোট সময় লাগে দুই বছর। এই প্লান্টের বিশেষজ্ঞরা ওপরের ইউনিটের স্ট্যান্ডার্ড কভার যুক্ত হাইড্রলিক টেস্টসহ চুল্লিপাত্রটির সব ধরনের পরীক্ষা করেন। এই পরীক্ষা চলার সময় চুল্লিটির অভ্যন্তরে ২৪ দশমিক ৫ এমপিএ চাপ সৃষ্টি করা হয়, যা অপারেটিং চাপের চেয়েও ১ দশমিক ৪ গুণ বেশি।