আদানির বিদ্যুৎ বন্ধের হুমকি: বাংলাদেশ কি বিদ্যুৎ সংকটের মুখে?
নিউজ ডেস্ক | প্রকাশিত: ৫ নভেম্বর ২০২৪ ১৭:০৫; আপডেট: ৮ ডিসেম্বর ২০২৪ ১২:৫৪
ভারতের আদানি গ্রুপ ৭ নভেম্বরের মধ্যে বকেয়া পরিশোধ না হলে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করার হুমকি দিয়েছে। এ নিয়ে দেশে নতুন করে লোড শেডিং শুরু হবে কিনা, এমন প্রশ্ন উঠেছে। প্রশ্ন উঠেছে, আদানির বিদ্যুৎ সরবরাহ না থাকলেও আমাদের নিজেদের বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো কি চাহিদা মেটাতে সক্ষম হবে?
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া জানায়, আদানি গ্রুপ বাংলাদেশের কাছে প্রায় ৮৫০ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা) পাওনা, এবং তাদের দাবি পূরণ না হলে সরবরাহ বন্ধ করা হতে পারে। এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) একটি এলসি খুললেও তা চুক্তির শর্ত পূরণে ব্যর্থ হয়েছে বলে আদানি অভিযোগ করেছে।
বকেয়া পরিশোধে বিলম্বের কারণ হিসেবে ডলার সংকটসহ সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতাকেও দায়ী করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে আদানি গড্ডা বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ১,০০০ মেগাওয়াটের বদলে মাত্র ৫৩০ মেগাওয়াট সরবরাহ করেছে। এটি আরো কমে ৭২৪ মেগাওয়াটে নেমেছে পহেলা নভেম্বর। এতে প্রশ্ন উঠছে, আদানি বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করলে কীভাবে মোকাবিলা করবে বাংলাদেশ?
২০১৫ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরের সময় ৪ বিলিয়ন ডলারের এই বিদ্যুৎ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ২০১৭ সালে পিডিবি এবং আদানি গ্রুপের মধ্যে আরও বিশদ চুক্তি হয়, যা ২৫ বছরের জন্য স্থায়ী। তবে তখন থেকেই বিভিন্ন মহল চুক্তির শর্ত নিয়ে আপত্তি জানায়। হাসিনা সরকার বলেছিল যে এটি দেশের উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য। বর্তমানে রাজনৈতিক পরিবর্তন এবং অর্থনৈতিক বাস্তবতার কারণে চুক্তির ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
বিকল্প বিদ্যুৎ সরবরাহে বাংলাদেশ নিজস্ব উৎপাদনে নির্ভরশীল হতে চায়। দেশের বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর বর্তমান উৎপাদন সক্ষমতা ২৯,০০০ মেগাওয়াট হলেও, চাহিদা প্রায় ১৭,৮০০ মেগাওয়াট। এদিক দিয়ে চিন্তা করলে, দেশীয় কেন্দ্রগুলোর উৎপাদন ধরে রাখা গেলে আদানি গ্রুপের বিদ্যুতের অভাবে দেশে লোড শেডিংয়ের কোনো প্রভাব না পড়ার কথা। তবে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর স্বাভাবিক উৎপাদন ধরে রাখতে পর্যাপ্ত জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করা জরুরি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: