১৯ ইপিজেড এলাকায় গ্যাস দিচ্ছে তিতাস
সঞ্চিতা সীতু | প্রকাশিত: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০১:৩০; আপডেট: ৭ ডিসেম্বর ২০২৪ ২০:১৬
শুধু রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলেই (ইপিজেড) শিল্পকারখানা স্থাপনকে উৎসাহিত করছে সরকার। এ জন্য দেশের ইপিজেড এলাকাগুলোতে গ্যাস বিতরণও শুরু করেছে তিতাস। রাষ্ট্রায়ত্ব গ্যাস সরবরাহকারী কোম্পানিটি জানিয়েছে, তাদের অধীনে ১৯টি ইপিজেড রয়েছে; যার চারটি সরকারি ও ১৫টি বেসরকারি। এগুলোর কয়েকটিতে এরইমধ্যে গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়েছে।
আর কয়েকটি জোনে গ্যাস সরবরাহের জন্য অবকাঠামো নির্মাণ করা হচ্ছে। রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের বাইরে আর কোনও শিল্প প্রতিষ্ঠানে নতুন করে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সংযোগ দেওয়া হবে না বলে সরকার ইতোমধ্যে ঘোষণা দিয়েছে। শিল্প স্থাপনে কৃষিজমি যাতে নষ্ট না হয়, এ জন্য এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সরকারি এই উদ্যোগ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে এমন কার্যক্রম হাতে নিয়েছে তিতাস।
সংস্থাটির সূত্রে জানা গেছে, বেসরকারি কয়েকটি ইপিজেডে এরইমধ্যে গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়েছে। অন্যগুলোতেও শিগগিরই যাতে গ্যাস সরবরাহ করা যায়, সে জন্য পাইপলাইন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, ‘ইকোনমিক জোনে শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপন করলে গ্যাস-বিদ্যুতের কোনও সমস্যা হবে না।
এ জন্য আমরা শিল্পমালিকদের অনুরোধ করছি, তারা যেন রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের মধ্যেই শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেন। প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ ইকোনমিক জোন কর্তৃপক্ষ (বেজা) শিল্পের বৈচিত্রায়ণ এবং কর্মসংস্থান, উৎপাদন ও রফতানি বৃদ্ধির মাধ্যমে দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়নকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে দেশের সম্ভাবনাময় এলাকায় অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করেছে।
তিতাসের অধীন রফতানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা যেগুলো
তিতাস জানায়, নারায়ণগঞ্জের আমান ইকোনমিক জোন, পানগাঁওয়ের ইস্ট-ওয়েস্ট স্পেশাল ইকোনমিক জোন, কেরানীগঞ্জের বসুন্ধরা স্পেশাল ইকোনমিক জোন ও আরিশা ইকোনমিক জোন, সোনারগাঁও ইকোনমিক জোন, নরসিংদীর পলাশের এ কে খান ইকোনমিক জোন, গজারিয়া ইকোনমিক জোন এবং ঢাকা সরকারি ইকোনমিক জোনে গ্যাস সরবরাহ করার জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণের ব্যয় নির্ধারণ করে সংশ্লিষ্ট ইকোনমিক জোন কর্তৃপক্ষকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের মেঘনা ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইকোনমিক জোন, মেঘনা বেসরকারি ইকোনমিক জোন, ময়মনসিংহের ত্রিশালের আকিজ ইকোনমিক জোন, রূপগঞ্জের সিটি ইকোনমিক জোন এবং জামালপুরের হলিদাহাটার জামালপুর সরকারি ইকোনমিক জোনে ইতোমধ্যে গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়েছে। এদিকে গ্যাস দিতে ইতোমধ্যে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ার হোসেনদি ইকোনমিক জোনে গ্যাস সরবরাহের জন্য ১৬ ইঞ্চি ব্যাসের ৬ দশমিক ৫ কিলোমিটার পাইপলাইন নির্মাণ কার্যক্রম শেষ হয়েছে। একইভাবে নারায়ণগঞ্জের জাপানিজ ইকোনমিক জোনের জন্য ২০ ইঞ্চি ৪ কিলোমিটার পাইপলাইন নির্মাণ করা হয়েছে। ময়মনসিংহের ত্রিশালে হামিদ ইকোনমিক জোনের জন্য ত্রিশাল টিবিএস থেকে ১৬ ইঞ্চি ব্যাসের ১০ কিলোমিটার পাইপলাইন স্থাপন কার্যক্রম চলছে। এ ছাড়া মুন্সীগঞ্জের আব্দুল মোনেম ইকোনমিক জোনে গ্যাস সরবরাহের জন্য ১২ ইঞ্চি ব্যাসের ৮ কিলোমিটার পাইপলাইন স্থাপন কাজ চলছে। এর বাইরে গাজীপুরের কোনাবাড়ি এলাকায় বে-ইকোনমিক জোনের পাইপলাইন নির্মাণের প্রয়োজনীয় মালামাল কেনা হয়েছে।তিতাসের এক কর্মকর্তা জানান, বেশ কিছু পাইপলাইনের কাজ চলমান রয়েছে। এর মধ্যে কুটুম্বপুর থেকে মেঘনাঘাট পর্যন্ত ৪২ ইঞ্চি ব্যাসের গ্যাস সঞ্চালন লাইন নির্মাণ শেষ হলে কুমিল্লা ইকোনমিক জোনের দৈনিক চাহিদা ১০০ মিলিয়ন ঘনফুট পূরণ করা যাবে।এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিতাসের মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) সেলিম মিয়া বলেন, ‘আমরা অনেকগুলো জোনে ইতোমধ্যে গ্যাস সরবরাহ শুরু করেছি। আর বাকিগুলোয় কাজ চলমান আছে। শিগগিরই জাপান ইকোনমিক জোনে গ্যাস সরবরাহ শুরু করা হবে।’
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: