ঢাকা বুধবার, ২২ মার্চ ২০২৩, ৮ চৈত্র ১৪২৯

কম খরচে ঘুরে আসুন মালদ্বীপ, পাশে আছে ইউএস-বাংলা!

মো. কামরুল ইসলাম, মালদ্বীপ থেকে ফিরে | প্রকাশিত: ১৮ ডিসেম্বর ২০২১ ০৬:১৩; আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০২১ ০৬:২১

পৃথিবীর অন্যতম নয়নাভিরাম ও অপরূপ সৌন্দর্যের দেশ মালদ্বীপ। বিধাতা যেন দুই হাত ভরে প্রকৃতির রূপে সাজিয়েছেন দেশটিকে।

নৈসর্গিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি, স্বর্গের দ্বীপ, প্রকৃতির কন্যা যেন সৌন্দর্যের রানী।

যা দুনিয়াজোড়া মানুষকে মুগ্ধ করে ও টানে। সরল, শান্ত ও মনোরম পরিবেশ মুগ্ধ করে সকলকে। ছোট ছোট দ্বীপ যেন নানান রঙে সেজে পর্যটকদের হাতছানি দিয়ে ডাকছে। 

যেসব ভ্রমণপিপাসু সমুদ্র পছন্দ করেন, নির্জনতায় হারিয়ে যেতে চান, সমুদ্রের অবগাহনে নিজেকে স্নান করাতে চান, প্রকৃতির সুশোভিত ও অপরূপ সৌন্দর্যের সুরা পান করতে চান, তাদের জন্য মালদ্বীপই হচ্ছে আকর্ষণীয়, প্রিয় ও আদর্শ স্থান। এমন অপরূপ দেশ মালদ্বীপ ভ্রমণে পাশে থাকবে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স। ভ্রমণে সর্বোচ্চ সুযোগ-সুবিধা এবং আর্থিক দিক মাথায় রেখে ইউএস-বাংলা থাকবে পর্যটকদের পাশে।

দশম আন্তর্জাতিক গন্তব্য হিসেবে মালদ্বীপের রাজধানী মালের উদ্দেশে সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করেছে বেসরকারি বিমান সংস্থা ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স। গত ১৯ নভেম্বর থেকে প্রথমবারের মতো ঢাকা থেকে মালদ্বীপের রাজধানী মালেতে সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করে এয়ারলাইন্সটি। 

অনিন্দ্য সুন্দর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর আধুনিকতার অপূর্ব মিশ্রণের শহর মালদ্বীপের ভ্রমণকে উপভোগ্য করতে প্রতিজনের ৫৮ হাজার ৯৯০ টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করেছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স।

২ রাত ৩ দিন থাকা, ঢাকা-মালে-ঢাকা সব ধরনের ট্যাক্সসহ এয়ার টিকিট, এয়ারপোর্ট-হোটেল-এয়ারপোর্ট যাতায়াত, সকালের নাশতাসহ আরও নানাবিধ সুযোগ-সুবিধা রয়েছে ট্যুর প্যাকেজে।

এছাড়া শুধু যাতায়াতের জন্য আসা-যাওয়ার ভাড়া নির্ধারণের জন্য করা হয়েছে ৪৫ হাজার ৫৪৫ টাকা। 

সাধ্যের মধ্যে ভ্রমণের সব সুখ মালদ্বীপে

মালদ্বীপের রাজধানী মালে, আধুনিক শহর হলহুমালে, বিমানবন্দর, বিলিংগিলি, ধোনিদো, আড্ডুসহ বড় বড় শহর, হাসপাতাল, অবকাশযাপন কেন্দ্রগুলোতে (রিসোর্ট) বাংলাদেশি শ্রমিকদের আধিক্য। এগুলোর উন্নয়নের সিংহভাগই সম্পন্ন হয়েছে বাংলাদেশি শ্রমিকদের মাধ্যমে। এখানে সরকারি হাসপাতালগুলোতে বিশেষজ্ঞসহ প্রায় তিনশ বাংলাদেশি ডাক্তার কর্মরত রয়েছেন। তাদের অনেকেই পরিবার-পরিজনসহ মালদ্বীপে বসবাস করেন। মালদ্বীপে বিশ্বের সেরা সেরা চেইন অবকাশ যাপনকেন্দ্রে বাংলাদেশিরাও কাজ করেন অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে। 

আড্ডু, বিলিংগিলি, হলহুমালে, ধোনিদোতে ছুটির দিনে তৈরি হয় উৎসবের আমেজ। মনে হয় এগুলো যেন বাংলাদেশের কোনো এক সমুদ্রসৈকত। মালেতে কখনো কখনো বাংলাদেশ দূতাবাস কর্তৃক আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আবার কখনো কখনো প্রবাসীদের উদ্যোগেও চলে নানান রকমের নাচ-গান, নাটক, যাত্রাপালা, বাউল সংগীত ও ওয়াজ মাহফিল।

বিচে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে উত্তাল সমুদ্রের ঢেউয়ের ওপর ছেলেমেয়েদের জলক্রীড়া (সার্ফিং)। সুনামি টাওয়ার ঘেঁষে বিশাল এলাকা জুড়ে আসে মায়াবী গোধূলি, শুরু হয় সূর্যাস্ত শেষে রাতের নিস্তব্ধতা। পর্যটকরা এখনে আসেন সমুদ্রস্নানে আর নীলাভ প্রকৃতিতে নিজেকে বিলীন করে দিতে। 

পর্যটনের জন্য বিখ্যাত দ্বীপরাষ্ট্র মালদ্বীপের সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে সর্বোচ্চ উচ্চতা মাত্র দুই দশমিক তিন মিটার এবং গড় উচ্চতা মাত্র এক দশমিক পাঁচ মিটার। এক হাজার দুইশরও বেশি ছোট ছোট দ্বীপ নিয়ে গঠিত এই দেশ। 

মালদ্বীপ নামটি সম্ভবত মালে দিভেহী রাজ্য হতে উদ্ভূত। নামকরণ নিয়ে যথেষ্ট মতভেদ লক্ষ করা যায়। কেউ কেউ দাবি করেন মালদ্বীপ অর্থ হচ্ছে ‘মেল দ্বীপ রাজ’ বা পুরুষশাসিত রাজ্য। মূলত ‘দ্বীপ’ একটি সংস্কৃত শব্দ আর ‘মাল’ শব্দটি দেশটির রাজধানীর নামের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। ঔপনিবেশিক আমলে ডাচরা তাদের নথিপত্রে এ দ্বীপপুঞ্জের নাম মালদ্বীপ বলে উল্লেখ করেন। পরে ব্রিটিশরাও একই নাম ব্যবহার করেন, যা দেশটির স্থানীয় নাম হিসেবে ব্যবহৃত হতো।

শ্রীলঙ্কান প্রাচীন সাহিত্য ‘মহাবংশ’-এ মালদ্বীপকে বলা হয়েছে ‘মহিলাদ্বীপ’ বা নারীদের দ্বীপ। তবে কেউ কেউ মনে করেন, মালদ্বীপ শব্দটি এসেছে সংস্কৃত মালাদ্বীপ থেকে, যার অর্থ ফুলের মালার দ্বীপ। সংস্কৃত শব্দ ‘দ্বীপমালা’ শব্দ থেকেই মালদ্বীপ। আবার কেউ কেউ বলেন যে ‘মালে দিভেই রাজে’- এই কথা থেকে মালদ্বীপ শব্দটির উদ্ভব। ‘মালে দিভেই রাজে’- এই কথার অর্থ ‘দ্বীপরাজ্য’। 

অনেকে মালদ্বীপকে মহলদ্বীপও বলে। মহল মানে (আরবিতে) প্রাসাদ। দ্বাদশ শতক থেকেই মালদ্বীপে মুসলিম শাসন। ইবনে বতুতা মালদ্বীপ গিয়েছিলেন ১৩৪৩ খ্রিস্টাব্দে। ১১৫৩ থেকে ১৯৫৩ অবধি- এই ৮০০ বছর ৯২ জন সুলতান নিরবচ্ছিন্নভাবে শাসন করেন দ্বীপটি। 

১৯৫৩ সালে সালতানাত-এর অবসান হয় ও মালদ্বীপ হয়ে ওঠে রিপাবলিক। মালদ্বীপের প্রথম রাষ্ট্রপতি ছিলেন আমিন দিদি। তিনি নারীস্বাধীনতার পক্ষে ছিলেন। গোঁড়ারা পিছু লাগল। ফলে আমিন দিদি উৎখাত হয়ে যান। এরপর আইনসভা পুনরায় সালতানাত-এর পক্ষে রায় দেয়। নতুন সুলতান হন মোহাম্মদ দিদি। ইনি ব্রিটিশদের সামরিক ঘাঁটি তৈরির অনুমতি দিলে ব্যাপক জনবিক্ষোভ সংঘটিত হয়। ১৯৬৫ সালের ২৬ জুলাই মালদ্বীপ ব্রিটিশদের কাছ থেকে পূর্ণ স্বাধীনতা লাভ করে।

লেখক- মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স




আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top