ঢাকা বুধবার, ৭ জুন ২০২৩, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০

বাংলাদেশের সেমির সম্ভাবনা বাঁচিয়ে রাখলো ইংল্যান্ড!

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ২ নভেম্বর ২০২১ ০৫:১৩; আপডেট: ৭ জুন ২০২৩ ০১:১৯

 স্পোর্টস ডেস্ক ০২ নভেম্বর ২০২১, ০০:০৫ টানা চার ম্যাচ জিতেছে ইংল্যান্ড টানা চার ম্যাচ জিতেছে ইংল্যান্ড

সুপার টুয়েলভে টানা তিন ম্যাচ হেরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল স্বপ্ন অনেকটাই শেষ হয়ে গেছে বাংলাদেশের।

তবু হিসাবের ‘মারপ্যাচে’ কিছুটা সম্ভাবনা বেঁচে আছে।

সেই সম্ভাবনার পথে কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়ে জটিল সমীকরণ। যেমন শ্রীলঙ্কা-ইংল্যান্ডের ম্যাচে জিততে হতো ইংলিশদের। এই হিসাব বাংলাদেশের পক্ষেই এসেছে। সোমবার  লঙ্কানদের ২৬ রানে হারিয়ে কাগজে-কলমে মাহমুদউল্লাহদের সেমিফাইনালের আশা বাঁচিয়ে রাখলো ইংল্যান্ড।

শারজা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জস বাটলারের অপরাজিত ১০১ রানের ইনিংসে ভর করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ইংল্যান্ড ৪ উইকেটে করে ১৬৩ রান।

সেই লক্ষ্যে ১৯ ওভারে লঙ্কানরা অলআউট ১৩৭ রানে। ইংলিশরা টানা চতুর্থ জয় পেলো সুপার টুয়েলভে। তাতে কোনও ম্যাচ না জেতা বাংলাদেশের সেমিফাইনালের স্বপ্ন হিসাবের সম্ভাবনায় বেঁচে থাকলো।

জটিল অর্থে সম্ভাবনা থাকলেও এই সমীকরণ মিলে যাওয়া একরকম অসম্ভবও। শ্রীলঙ্কা, ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে তিন ম্যাচ হেরে বাংলাদেশের পয়েন্ট শূন্য। লাল-সবুজ জার্সিধারীদের পরের দুই ম্যাচ দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। দুটি ম্যাচ জিতলে তাদের পয়েন্ট হবে ৪। এই দুই ম্যাচ জিতলেও তাকিয়ে থাকতে হবে পয়েন্ট টেবিলে বাকিদের ফলাফলের দিকে।

গ্রুপ-১-এ চার ম্যাচের চারটি জিতে ৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে ইংল্যান্ড। আগামী ৬ নভেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারাতে পারলে পুরো ১০ পয়েন্ট নিয়েই সেমিফাইনাল খেলবে ইংলিশরা। বাংলাদেশের সেমিফাইনালে যেতে হলে শেষ ম্যাচটিতে হারা যাবে না ইংল্যান্ডের।

তখন বাংলাদেশ যদি অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জিতে যায় তাহলে তাদের পয়েন্ট হবে ৪। পাশাপাশি বাংলাদেশের বিপক্ষে হারের পর অস্ট্রেলিয়াকে হারতে হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেও। সেক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়ারও পয়েন্ট ৪ থাকবে।

শুধু অজিদের বিপক্ষে ক্যারিবীয়দের জয় প্রত্যাশা করলেই হবে না। তখন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে কাইরন পোলার্ডদের হারও প্রত্যাশা করতে হবে। তাহলে ক্যারিবীয়দেরও হবে সমান ৪ পয়েন্ট।

এই পরিস্থিতিতে দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়া কোনও জয় না পেলে তাদের পয়েন্ট ৪-ই থাকবে। তখন ইংল্যান্ড বাদে বাকি চার দলের পয়েন্ট ৪ হলে নেট রানরেটের বিবেচনায় এখান থেকে দ্বিতীয় দল সেমিফাইনালের টিকিট কাটবে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ দলকে অবশ্যই নেট রানরেটে এগিয়ে থেকে ম্যাচ জিততে হবে! যা মেলানো অনেকটাই কঠিন।

ইংল্যান্ড অবশ্য কঠিন কাজ সাধ্য করেছে শারজায়। ব্যাটিং ব্যর্থতার পরও বাটলারের জাদুকরী ইনিংসে ১৬৩ রানের বড় সংগ্রহ দাঁড় করে। সেই লক্ষ্য পেরোতে পারেনি শ্রীলঙ্কা।

ওপেনিং ব্যর্থতার পর সর্বোচ্চ ৩৪ রান করেছেন ভানিন্দু হাসারাঙ্গা। ২১ বলের ইনিংসে মেরেছেন ৩ চার ও ১ ছক্কা। দাসুন শানাকা ও ভানুকা রাজাপাকসের ব্যাট থেকে আসে ২৬ রান করে।

ইংল্যান্ডের সবচেয়ে সফল বোলার মঈন আলী। এই স্পিনার ১৫ রান দিয়ে নিয়েছেন ২ উইকেট। তার মতো ২টি করে উইকেট নিয়েছেন আদিল রশিদ ও ক্রিস জর্ডান।

এর আগে বাটলার করেন দারুণ এক সেঞ্চুরি। দুষ্মন্থ চামিরার টানা দুই বল ডট দিয়ে সুবর্ণ সুযোগটা হাতছাড়া হচ্ছিল প্রায়। সেঞ্চুরি তাও আবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মঞ্চে, হেলায় নষ্ট করতে যাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু শারজা ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ম্যাচে যে লেখা ছিল অন্যকিছু।

তাই ৯৫ রান নিয়ে শেষ বলটায় উড়িয়ে মারলেন ছক্কা, ব্যস হিসাব মিলে গেলো! দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরিতে অনন্য হয়ে রইলো বাটলারের নাম। ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম সেঞ্চুরি যে ইংলিশ এই ব্যাটারের।

শারজায় স্লো উইকেটে ইংল্যান্ডকে চেপে ধরেছিল শ্রীলঙ্কা। ৩৫ রানে হারায় ৩ উইকেট। সংগ্রাম করতে থাকা বাটলার সময়ের দাবি মিটিয়ে দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছেন।

মন্থর ব্যাটিংয়ে ক্রিজে টিকে থেকে পরে ঝড় তুলেছিলেন লঙ্কান বোলারদের ওপর। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এটিই তার প্রথম সেঞ্চুরি। সেই প্রথমটা বিশ্বকাপের মঞ্চে হওয়ার আনন্দ দ্বিগুণ হওয়ার কথা এই উইকেটকিপার ব্যাটারের।

২০তম ওভার ৮৭ রান দিয়ে শুরু করেছিলেন বাটলার। প্রথম বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে সেঞ্চুরির সম্ভাবনা ভালোভাবেই জাগিয়ে তুলেছিলেন। পরের বলে এলো ২।

তৃতীয় বলে তো পাথুম নিশানকার সৌজন্যে বেঁচে যান। শ্রীলঙ্কান ফিল্ডার ছাড়েন তার ক্যাচ। পরে দুই বল, মানে চতুর্থ ও পঞ্চম বলে রান নিতে না পারলে সেঞ্চুরির সম্ভাবনা ফিকে হয়ে যায়। কিন্তু শেষ বলে দুর্দান্ত ছক্কায় টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি পূরণ করেন ৬৭ বলে। হার না মানা ১০১ রানের চমৎকার ইনিংসটি সাজিয়েছেন ৬ বাউন্ডারি ও ৬ ছক্কায়।

এবারের বিশ্বকাপে এটাই প্রথম শতকের ঘটনা। তার সঙ্গে অধিনায়ক ইয়োন মরগানের ৩৬ বলে খেলা ৪০ রানের ইনিংসে ভর করে ইংলিশরা নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেটে করেছে ১৬৩ রান।




আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top