বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর প্রাক্কালে সাম্প্রদায়িক অপশক্তিগুলো ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। এই অপশক্তিগুলো কেবল মুক্তিযুদ্ধের মহান চেতনাকেই নস্যা করতে উদ্যত নয়; তারা বাংলাদেশেকে বন্ধুহীন-বিচ্ছিন্ন রাষ্ট্রে পরিণত করতেও অতিমাত্রায় সক্রিয়। সাম্প্রতিক সময়ে অস্থিরতা ও বিভেদ সৃষ্টির এই অপচেষ্টাকারীদের বিরুদ্ধে দেশের অসাম্প্রদায়িক-প্রগতিশীল মানুষদের মতো বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক কেন্দ্র (সিবিআইআর) গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।
‘ইতিহাসের এক যুগ সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে বাঙালি জাতি যখন স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের অধীর অপেক্ষায়, তখন এই অপচেষ্টাকারীরা পাকিস্তানের পরাজিত সেই শক্তির প্রতিভূ হয়ে দেশের অগ্রযাত্রাকে থামিয়ে দিতে তৎপর। আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে আরও লক্ষ্য করছি, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষকে মহাসমারোহে উদযাপনে সরকারের গৃহীত কর্মসূচি বানচালে একটি উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে প্রকাশ্যে মাঠে নেমেছে। এই অপচেষ্টাকারীদের পুরোভাগে নেতৃত্ব দিচ্ছে কয়েকটি সংগঠন। এই সংগঠনগুলো বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশকে বিতর্কিত কর্মসূচি পালন করে দেশকে অস্থিতিশীল করতে তৎপর। এখন মহান মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের প্রধান মিত্র চিরবন্ধুপ্রতিম ভারতের সঙ্গে বৈরিতা সৃষ্টির অপচেষ্টায় অতি সক্রিয়। আমরা গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন সূত্রে অনুসন্ধানে জেনেছি, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরাজিত শক্তির প্রত্যক্ষ-পরোক্ষে মদতেই এই সংগঠন ও ব্যক্তিগুলো অপচেষ্টায় মরিয়া হয়ে উঠেছে।
‘সিবিআইআর মনে করে, এই ধরনের অপতৎপরতায় বাংলাদেশকে অকার্যকর রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত করতে এবং দেশকে বন্ধুহীন করার এক সুগভীর নীলনকশার জাল বিস্তারেই তাদের লক্ষ্য। ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়’– বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেখানো পথেই বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতির ভিত্তি রচিত। সেই নীতি ও আদর্শকে অবলম্বন করেই বাংলাদেশ বন্ধুপ্রতিম ভারতসহ অপরাপর রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির পথে হাঁটছে। আঞ্চলিক এই স্থিতিশীলতাই চক্রান্তকারীদের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা মনে করি, এই অপশক্তিগুলো যে দেশবিরোধী অপতৎপরতায় লিপ্ত অবিলম্বে তাদের আইনের আওতায় এনে চক্রান্তের মূলোৎপাটন করা অত্যন্ত জরুরি। মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে যে সমৃদ্ধি ও স্বাতন্ত্র্য নিয়ে যেভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছে তাকে অর্থবহ ও টেকসই করতেও এসব অপশক্তির বিষদাঁত উপড়ে ফেলা জরুরি। আমরা বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক কেন্দ্রের পক্ষ থেকে সরকারকে এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণে উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।’
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: