সাংবাদিকদের স্বার্থবিরোধী কিছুই করবে না সরকার: ওবায়দুল কাদের
নিজস্ব প্রতিবেদক: | প্রকাশিত: ২১ মে ২০২১ ০৪:১০; আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০০:০১

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সাংবাদিকদের স্বার্থবিরোধী কোনও কিছুই করবে না সরকার। তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার সরকার সাংবাদিকবান্ধব সরকার। গণমাধ্যমের যেকোনও বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অত্যন্ত সহানুভূতিশীল।’
বৃহস্পতিবার (২০ মে) বিকালে তার সরকারি বাসভবনে ব্রিফিংকালে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
কাদের বলেন, ‘সাংবাদিকরা পেশাগত কারণে বিভিন্নভাবে তথ্য সংগ্রহ করেন, তথ্য অধিকার আইন অনুযায়ী, অপ্রকাশযোগ্য তথ্য ছাড়া অন্যান্য তথ্য সংগ্রহের সুযোগ রয়েছে সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়া অনুসরণ করে।’ কিন্তু অভিজ্ঞ সাংবাদিক তথ্য সংগ্রহে যে প্রক্রিয়া অনুসরণ করেছেন, সেটা সঠিক পদ্ধতি কিনা তা ভেবে দেখার বিষয় বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
গতকাল (বুধবার) বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচারিত একটি ভিডিওতে দেখা যায়, সংশ্লিষ্ট সাংবাদিক একপর্যায়ে নিজের ভুল স্বীকার করে মুখে মুচলেকা দেওয়ার কথাও বলেছেন উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘চৌর্যবৃত্তি আর সাংবাদিকতাকে আমরা কি এক করে ফেলতে পারি?’
তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত সত্য বের হওয়ার আগেই তার পক্ষে বা বিপক্ষে আন্দোলন কতটা যৌক্তিক, সেটাও সাংবাদিক বন্ধুদের ভেবে দেখার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘একজন অন্যায় করলে ঢালাওভাবে সবাই তো সেজন্য দায়ী নন।’
সচিবালয়ে প্রতিদিন সাংবাদিকরা পেশাগত দায়িত্ব পালন এবং তথ্য সংগ্রহ করেন। কিন্তু কেউ এভাবে লুকিয়ে ফাইলের ছবি তোলেন না বা নথি নিয়ে যায় না। সংশ্লিষ্ট সাংবাদিক নিজেও ভুল স্বীকার করেছেন।’
আত্মস্বীকৃত একজনের ভুলের জন্য সাংবাদিক বন্ধুদের এমন অবস্থান গ্রহণ কেন? আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিকদের বিবেকের কাছে এই প্রশ্ন রাখেন।
কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নন, আইন সবার জন্য সমান জানিয়ে কাদের বলেন, ‘যেহেতু বিষয়টি তদন্তাধীন, তাই এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাই না।’
ইতোমধ্যে বিষয়টি তদন্তের জন্য ডিবিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্তকাজে সরকার কোনোরূপ হস্তক্ষেপ করবে না বলেও জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
বিএনপি কাল্পনিক অভিযোগ আনলেও প্রকৃতপক্ষে সরকার দমন-পীড়নে বিশ্বাসী নয় উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি নেতারা প্রতিদিনই সরকার এবং প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিষোদগার করে যাচ্ছেন।’
তিনি বলেন, ‘সেজন্য তো বিএনপির কোনও নেতাকে কোনও প্রকার হেনস্তা বা গ্রেফতার করা হয়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনা সরকার গঠনমূলক সমালোচনাকে স্বাগত জানায় এবং স্বাধীন সাংবাদিকতা ও জনমতকে সম্মান করে। অপরদিকে বিএনপি জনমতকে উপেক্ষা করে বলেই নির্বাচনে গিয়ে দুপুরের আগেই সরে দাঁড়ায়। এমনকি নির্বাচিত হয়েও সংসদে না গিয়ে জনরায়কে অপমানিত করে। অথচ তারাই এখন জবাবদিহির সবক দিচ্ছে।’
শেখ হাসিনা সরকার অবাধ তথ্যপ্রবাহ তথা গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সরকারের উদারনৈতিক গণতান্ত্রিক মনোভাবের কারণেই সাম্প্রতিককালে দেশে গণমাধ্যমের ব্যাপক সম্প্রসারণ ঘটেছে।’ গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা এবং অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় গণমাধ্যমের ভূমিকা প্রশংসনীয় বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের ইস্যুতে কথা বলছেন, অথচ তাদের সময় সাংবাদিক শামসুর রহমান, মানিক সাহা, হুমায়ুন কবির বালুসহ বেশ কিছু সাংবাদিককে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। অনেককে করা হয়েছে নির্যাতন—তা কি ভুলে গেছেন ফখরুল সাহেবরা, প্রশ্ন রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
এরপর সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দেশের সব অঞ্চলের মধ্যে সড়ক যোগাযোগ নেটওয়ার্ক উন্নয়নের লক্ষ্যে সেতু বিভাগের জন্য একটি মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করতে আজ বিকালে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ এবং নেতৃত্বদানকারী স্পেনের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান টিপসা’র সঙ্গেএক চুক্তি সই অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।
২৪৩ কোটি টাকার চুক্তিপত্রে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের পক্ষে প্রধান প্রকৌশলী কাজী মো. ফেরদৌস এবং নেতৃত্বদানকারী পরামর্শক প্রতিষ্ঠান টিপসা’র অথরাইজড প্রতিনিধি রাফায়েল ডেলগাদো জিমেনিজ নিজ নিজ পক্ষে সই করেন। এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সেতু বিভাগের সচিব মো. বেলায়েত হোসেন, বাংলাদেশে নিযুক্ত স্পেনের রাষ্ট্রদূত ফ্রানসিসকো ডি এসিস বেনিটেজ সালাস ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠান টিপসা’র সভাপতি এবং সিইও পাবলো বুয়েনো টমাস ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: