

ম্যাচের প্রথম ভালো সুযোগ কাজে লাগিয়ে দুর্দান্ত এক গোলে কলম্বিয়াকে এগিয়ে নেন লুইস দিয়াস। দশম মিনিটে দূরের পোস্টে চমৎকার এক ক্রস করেন হুয়ান কুয়াদরাদো। লাফিয়ে বলের নাগাল পাননি উইলমার বারিওস। তার পেছনেই থাকা অরক্ষিত দিয়াস অসাধারণ এক বাইসাইকেল কিকে খুঁজে নেন জাল। কিছুই করার ছিল না ব্রাজিল গোলরক্ষক ওয়েভেরতনের।
বল দখলে বেশ এগিয়ে ছিল ব্রাজিল। এগিয়ে ছিল আক্রমণেও। কিন্তু প্রথমার্ধে কলম্বিয়ার রক্ষণ ভেঙে গোলরক্ষকের তেমন কোনো পরীক্ষা নিতে পারেননি তারা। এই সময়ে স্বাগতিকদের কেবল একটি চেষ্টা ছিল লক্ষ্যে। ৪০তম মিনিটে রিশার্লিসনের দুর্বল হেড অনায়াসে নিয়ন্ত্রণে নেন গোলরক্ষক দাভিদ অসপিনা।
প্রতি-আক্রমণে মাঝে মধ্যেই ভীতি ছড়ায় কলম্বিয়া। তবে এগিয়ে যাওয়ার পর গোলের জন্য আর কোনো শটই নিতে পারেনি তারা।
নয় ম্যাচের মধ্যে প্রথমবারের মতো পিছিয়ে থেকে বিরতিতে যাওয়া ব্রাজিল দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে পরিবর্তন আনে ফরমেশনে। ৪-৩-৩ থেকে সরে যায় ৪-৪-২ এ। এভেরতন রিবেইরোর জায়গায় বদলি নামেন ফিরমিনো। বাড়ে স্বাগতিকদের আক্রমণে গতি।
দ্বিতীয়ার্ধে রক্ষণে নিজেদের আরও বেশি গুটিয়ে নেয় কলম্বিয়া। বেশিরভাগ সময় তাদের অর্ধেই ছিলেন ২১ ফুটবলার।
৫৫তম মিনিটে সমতা ফেরানোর দারুণ একটি সুযোগ আসে তাদের সামনে। ডি বক্সে ডিফেন্ডারের আগেই বলের কাছে পৌঁছান নেইমার। কিন্তু এড়াতে পারেননি সতর্ক অসপিনাকে।
৬৬তম মিনিটে একটুর জন্য সমতা ফেরাতে পারেনি ব্রাজিল। ফিরমিনো পেনাল্টি স্পটের কাছে খুঁজে নেন নেইমারকে। পিএসজির এই তারকা ফরোয়ার্ডকে ঠেকাতে লাইন ছেড়ে বেরিয়ে আসেন অসপিনা। তাকে এড়িয়ে ডানদিকে সরে যান নেইমার কিন্তু ফাঁকা জালে বল পাঠাতে পারেননি তিনি। তার শট ব্যর্থ হয় পোস্টে লেগে।
৭৮তম মিনিটে রেনান লোদির ক্রসে ফিরমিনোর জোরালো হেড অসপিনার হাত ফস্কে জড়ায় জালে। এর আগে ব্রাজিলের ১৭নং জার্সিধারী খেলোয়ার নেইমারের শট রেফারির গায়ে লাগলে কলম্বিয়ার খেলোয়াড়রা খেলা বন্ধ করে দাঁড়িয়ে থাকে। তবে খেলা চালিয়ে যাওয়ারই ইঙ্গিত দেন রেফারি। তখনই ব্রাজিলের একজন বল বাড়ান লোদিকে। তার ক্রসেই হয় গোল। গোল বাতিলের জন্য প্রতিবাদ জানান কলম্বিয়ার ফুটবলাররা। ভিএআরের সাহায্যে আর্জেন্টাইন রেফারি নেস্তর পিতানা গোলের বাঁশি বাজালেও থামেনি অসপিনা-কুয়াদরাদোদের প্রতিবাদ।
গোলের মিনিট পাঁচেক পর খেলা শুরু হলে আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠে পরিস্থিতি।

সমতা ফেরানোর পর আরও উজ্জীবিত হয়ে উঠে ব্রাজিল। যোগ করা ১০ মিনিটের দশম মিনিটে এগিয়েও যায় তারা। নেইমারের কর্নারে চমৎকার হেডে জাল খুঁজে নেন কাসেমিরো।
আগের দুই ম্যাচে সাত গোলের পাঁচটিই ব্রাজিল করে দ্বিতীয়ার্ধে। এই ম্যাচে দুই গোল করে পেল টানা তৃতীয় জয়। ৯ পয়েন্ট নিয়ে তারাই শীর্ষে।
৪ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে আপাতত দুই নম্বরে আছে কলম্বিয়া। একুয়েডরের বিপক্ষে ২-২ গোলে ড্র করা পেরু ৩ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে আছে তিনে।
খেলা শেষে এর কলোম্বিয়ার মিডফিল্ডার কুয়াদরাদো জানান, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অভিজ্ঞ এবং বিশ্বকাপের ম্যাচ পরিচালনার অভিজ্ঞতায় ঋদ্ধ পিতানার এমন রেফারিং মানতেই পারছেন না। ওই সিদ্ধান্ত কলম্বিয়াকে ক্ষতিগ্রস্থ করেছে বলে অভিযোগ করেন দিয়াসের গোলে অবদান রাখা এই মিডফিল্ডার।
“এটা দুঃখজনক যে, বিশ্বের সেরা দলগুলোর একটির বিপক্ষে আমরা সবটুকু নিংড়ে দেওয়ার পর রেফারির এমন একটি সিদ্ধান্তের জন্য হারলাম।”
“আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এত অভিজ্ঞতা সম্পন্ন একজন রেফারি, যিনি বিশ্বকাপের ম্যাচও পরিচালনা করেছেন, তিনিই কি-না এমন ভুল করলেন এবং এতে ম্যাচটা ক্ষতিগ্রস্থ হলো।”
২ পয়েন্ট নিয়ে একুয়েডর আছে চারে। সমান পয়েন্ট নিয়ে পাঁচে ভেনেজুয়েলা।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: