আগের ম্যাচে দুটি রেকর্ড গড়া রোনালদো এবার গড়লেন আরেক কীর্তি। মেজর টুর্নামেন্টে (বিশ্বকাপ ও ইউরো মিলে) ইউরোপিয়ান খেলোয়াড়দের সর্বোচ্চ গোলের তালিকায় ১৯ গোল নিয়ে বসলেন শীর্ষে; জার্মানির সাবেক স্ট্রাইকার মিরোস্লাভ ক্লোসার পাশে।
ইউরোয় তার গোল হলো রেকর্ড ১২টি। জাতীয় দলের হয়ে ১০৭, ইরানের আলি দাইয়ের রেকর্ড ছুঁতে প্রয়োজন আর দুটি।
দারুণ খেলতে থাকার মাঝে ওভাবে হঠাৎ পিছিয়ে পড়ার ধাক্কা অনেক সময়ই বড় হয়ে দেখা দেয়। তবে এদিনের জার্মানি ছিল বিধ্বংসী রূপে। প্রতিপক্ষকে গুছিয়ে ওঠার সুযোগই দিচ্ছিল না তারা।
বিরতির আগে প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ সময় বল দখলে রেখে গোলের উদ্দেশে ১০টি শট নেয় তারা, যার ছয়টি ছিল লক্ষ্যে এবং প্রায় সবগুলোই কঠিন চ্যালেঞ্জ জানায় গোলরক্ষককে। সবগুলো পরীক্ষায় দারুণ নৈপুণ্যে উতরে যান রুই পাত্রিসিও। তারপরও দুই আত্মঘাতী গোলে পিছিয়ে থেকে বিরতিতে যায় পর্তুগাল।
৩৫তম মিনিটে ডান দিক থেকে আসা ক্রস পেয়ে ভলিতে মাঝ বরাবর কাই হাভার্টজকে বাড়ান গোসেন্স। সঙ্গে লেগে থাকা ডিফেন্ডার রুবেন দিয়াস বিপদমুক্ত করতে গিয়ে জালে ঠেলে দেন বল। এই গোলে পর্তুগিজ রক্ষণের অবস্থান ছিল দৃষ্টিকটু। ডি-বক্সে এক সারিতে দাঁড়িয়ে ছিলেন তিন জন, বাঁ দিকে গোসেন্স ছিলেন ফাঁকায়।
চার মিনিট পর আবারও আত্মঘাতী পর্তুগাল; এবার গোলমুখে বল ক্লিয়ার করতে একটু বেশি সময় পেয়েছিলেন রাফায়েল গেররেরো। কিন্তু তিনিও নিজেদের জালেই নেন জোরালো শট!
শুরুর ভুল শুধরে বিরতির পর ঘুরে দাঁড়াবে কী, উল্টো ৯ মিনিটের ব্যবধানে দুই গোল খেয়ে আরও কোণঠাসা হয়ে যায় পর্তুগাল। ৫১তম মিনিটে বাঁ দিক থেকে গোলমুখে ক্রস বাড়ান শুরু থেকে দারুণ খেলতে থাকা গোসেন্স। তাকে বাধা দিতে কিছুটা এগিয়ে ছিলেন গোলরক্ষক, সেই সুযোগে বিনা বাধায় বল জালে পাঠান চেলসি ফরোয়ার্ড হাভার্টজ। ৬০ তম মিনিটে ডান দিক থেকে জশুয়া কিমিচের ক্রসে লাফিয়ে হেডে স্কোরলাইন ৪-১ করেন গোসেন্স।
সাত মিনিট পর ব্যবধান কমায় পর্তুগাল। এই গোলেও অবদান আছে রোনালদোর। মৌতিনিয়োর ফ্রি কিকে বল সবাইকে ফাঁকি দিয়ে দূরের পোস্ট দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছিল, শেষ মুহূর্তে বাইলাইন থেকে দারুণভাবে বল গোলমুখে ফেরত পাঠান অধিনায়ক, ছুটে গিয়ে অনায়াসে জালে ঠেলে দেন জটা।
বাকি সময়ের খেলায় আরও গতি পায়। ৭৯তম মিনিটে ম্যাচ নতুন মোড় নিতে পারত, তবে রেনাতো সানচেসের জোরালো শট পোস্ট কাঁপায়। পর্তুগাল শিবিরে যোগ হয় হতাশা আর নিজেদের মেলে ধরে দারুণ জয়ের আনন্দে মাঠ ছাড়ে জার্মানি।
‘মুত্যুকূপ’ নামের গ্রুপটি থেকে নকআউট পর্বে ওঠার লড়াই দারুণ জমে উঠেছে। দিনের প্রথম ম্যাচে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হাঙ্গেরিকে ১-১ গোলে রুখে দিয়েছে হাঙ্গেরি।
দুই রাউন্ড শেষে প্রতিটি দলেরই আছে পরের পর্বে ওঠার। শীর্ষে থাকা ফ্রান্সের পয়েন্ট ৪। ৩ করে পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে জার্মানি ও তিনে পর্তুগাল। গ্রুপে তলানিতে থাকা হাঙ্গেরির পয়েন্ট ১।
শেষ রাউন্ডে আগামী বুধবার বুদাপেস্টে শিরোপাধারী পর্তুগালের মুখোমুখি হবে ফ্রান্স। একই সময়ে মিউনিখে জার্মানির বিপক্ষে খেলবে হাঙ্গেরি।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: